পুষ্টি সমস্যা মোকাবেলায় বাজার ব্যবস্থাপনাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে - ব্র্যাক ও লানসার গবেষণা স্টাডির তথ্য প্রকাশ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি। ঢাকা, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬। দারিদ্র্য হ্রাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য আগ্রগতি অর্জন করলেও পুষ্টি পরিস্থিতিতে সন্তোষজনক অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। এখনও বাংলাদেশে পাঁচ বছরের নীচে ৭৩ লাখ শিশু খর্বাকার, ৬৫ লাখ শিশু অপেক্ষাকৃত কম ওজনের এবং ২৯ লাখ শিশু শারীরিকভাবে দুর্বল। তাই খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি সমস্যা মোকাবেলায় কৃষিজ উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি কৃষি খাদ্যের ভ্যালু চেইন বা খামার থেকে বাজারের মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে এ মুহূর্তে অগ্রাধিকার দিতে হবে।আজ মঙ্গলবার সকালে ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ‘কৃষি ও পুষ্টির মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন ; বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মইনউদ্দিন আব্দুল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের গবেষণা ও মূলায়ন বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. আব্দুল বায়েস। ‘কৃষি খাদ্য ভ্যালু চেইন উদ্যোগসমূহ: খাদ্য ¯^য়ং সম্পূর্ণতার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে কমলা রঙের মিষ্টি আলু চাষের উদ্যোগ’ বিষয়ক গবেষণা স্টাডি (২০১৫-২০১৬) তুলে ধরেন ব্র্যাকের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচির কর্মসূচি প্রধান ড. সিরাজুল ইসলাম।ব্র্যাকের ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট ইউনিট এর প্রধান এন্ড্রু জেনকিনস এর সঞ্চালনায় সেমিনারে অন্যদের মধ্যে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (ইফপ্রি) এর চফি অব পার্টি ড. আকতার আহমেদ, ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো বর্নালী চক্রবর্তী, লানসা-ব্র্যাক এর গবেষক ড. উত্তম কুমার দেব প্রমূখ। ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগ ও আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান লেভারেজিং এগ্রিকালচার ফর নিউট্রিশান ইন সাউথ এশিয়া (লানসা) এ সেমিনারের আয়োজন করে।ড. সিরাজুল ইসলাম লানসার গবেষণার উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরে বলেন, কীভাবে কৃষিখাদ্যের ভ্যালু চেইন অর্থাৎ খামার থেকে খানা অব্দি (বাজারের মাধ্যমে) খাদ্যসরবরাহ পদ্ধতির উন্নয়ন ঘটানো যায় এখন সেদিকটাই আমাদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এতে দরিদ্র মানুষের প¶ে পর্যাপ্ত ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যের প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।পুষ্টি সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশে কমলা রঙের মিষ্টি আলু চাষ একটা দৃষ্টান্ত হতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি তাঁর স্টাডিতে উৎপাদন ও দামের তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরে বলেন, সাধারণ আলু যেখানে প্রতি হেক্টরে ৩০-৩৫ টন হয়, সেখানে অরেঞ্জড ফ্লেসড মিষ্টি আলু চাষ হয় প্রতি হেক্টরে ৪০-৪৫ টন। মৌসুমকালীন যেখানে গোল আলুর দাম প্রতি কেজি ১০ টাকা, সেখানে কমলা রঙের মিষ্টি আলুর দাম প্রতি কেজি ৬-৭ টাকা। আর ভিটামিনের দিক থেকে অন্যান্য আলুতে বি-ক্যারোটিন একেবারে সামান্য। অথচ কমলা রঙের মিষ্টি আলুতে বি-ক্যারোটিনের মাত্রা অনেক বেশি।প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মইনউদ্দিন আব্দুল্লাহ বলেন, বর্তমান সরকার দেশের জনগণের পুষ্টি উন্নয়ন ও বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন: জাতীয় পুষ্টি নীতি ২০১৫ (এনএনপি ২০১৫) প্রণয়ন, ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিস চালু করা ইত্যাদি। কৃষি সম্প্রসারণ নীতিতেও (এনএইপি ২০১২) এ বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘এনজেল’ প্রকল্প পুষ্টি বর্ধনে প্রয়োজনীয় কৃষি কর্মসূচিতে বিনিয়োগের সুযোগ ও পরিকল্পনা যাচাই করছে।